বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
কুমারখালীতে ঝড়ে ভাঙল বিধবার ঘর, ফসলের ক্ষতি
/ ৯
প্রকাশিত সময় : রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩, ৪:০৫ অপরাহ্ন

কুমারখালী প্রতিনিধিঃ দুই বছর হলো করোনায় স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র মেয়ের স্বামীও তাদের খোঁজ নেয়না প্রায় আট বছর হলো। ভাঙা টিনের ঘরে একমাত্র নাতিকে নিয়ে পরের বাড়ি কাজ করে কোনোমতে তিনজনের জীবনটা চলছিল। সেই ঘরও ভাঙল ঝড়ে। এখন কই যাব? কনে (কোথায়) থাকব? ক্যাম্বা করে (কিভাবে) ঘর সারবো (মেরামত)? কিডা (কে) আমার দেখবিনি?। রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে আক্ষেপ করে কথা গুলো বলছিলেন মোছা. পিয়ারীর খাতুন (৪০)। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের ঘোষমোড় মাঠপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের স্ত্রী। গত শনিবার শেষ বিকেলে কাল বৈশাখী ঝড়ে তাঁর একমাত্র মাথাগোঁজার ঠাই টিনশেডের চারচালা ঘরটি ভেঙে গেছে। দুপুরে সরেজমিন গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পিয়ারীর স্বামী একজন দুই টাকা মালের হকার ছিলেন। ২০২০ সালের করোনায় তাঁর স্বামী মারা গেছেন। স্বামী পরিত্যাক্ত তাঁর মেয়ে রূপা খাতুন (২৫) ও নাতি রাহুল শেখ (৭) প্রায় আট বছর ধরে তাঁর সাথেই থাকেন। পিয়ারী ও তাঁর মেয়ে বিভিন্ন মানুষের বাসা ও অনুষ্ঠান বাড়িতে কাজ করে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁদের বসবাসের জন্য একটা টিনের জরাজীর্ণ ঘর আছে। সেই ঘরটিও গত শনিবারের কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে। কিন্তু ঘরটি মেরামত করার সামর্থ তাদের নেই। বর্তমানে তাঁরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এবিষয়ে মেয়ে রূপা খাতুন বলেন, তিনি ও তাঁর মা পরের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে বেঁচে আছেন। ঝড়ে তাদের একমাত্র ঘরটি ভেঙে গেছে। এখন মেরামত করার সামর্থ নেই। তিনি সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহযোগীতা প্রত্যাশা করেছেন। তাঁর ভাষ্য, তিনি স্বামী পরিত্যাক্ত, তাঁর মা বিধবা। কিন্তু তাঁরা সরকারিভাবে কোনো ভাতা বা সহযোগীতা পান না। এছাড়াও শনিবারের কালবৈশাখী ঝড় ও ভারি বৃষ্টিতে উপজেলায় প্রায় ১৮৮ হেক্টর জমির ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তন্মধ্যে ৭৫ হেক্টর জমির বোরো ধান, ৩৬ হেক্টর জমির পাট, ২৫ হেক্টর জমির ভূট্টা, ১৯ হেক্টর জমির কলা, ১২ হেক্টর জমির তিল, ১৫ হেক্টর জমির সবজি ও ৫ হেক্টর জমির আম রয়েছে। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীস কুমার দাস। এবিষয়ে চাঁদপুর ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামের কৃষক মো. আনসার আলী বলেন, ঝড়ে তাঁর প্রায় ৫ বিঘা জমির উঠতি বয়সি কলাসহ গাছ ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে। এতে তাঁর প্রায় ৮ -১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ঝড়ে অসহায় পরিবারের ঘর ভাঙা ও ফসলের ক্ষতির খবর পেয়েছেন তিনি। পরিবারটির পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ইউএনও।

 

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরও সংবাদ
ফেসবুক পেজ