
=সৈয়দা রাশিদা বারী=
কারো কারো, কোন কোন মাস অথবা বছর শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, অনেক ব্যস্ততারও হয়। অবলা, অজানা পথেরও হয়। সে সব কারণ ব্যাখ্যার ভাষা এবং ধৈর্য কখনো সখনো তার নাও আসতে বা থাকতে পারে। তখন সেই সব ব্যাখ্যা, সে ভাঁজ করে তুলে রাখেন মনের বাক্সে। তবে তুলে রাখলেও, ব্যাখ্যা চাপা পড়ে বা আটকিয়ে থাকবে না। উড়েও যাবে না। যেহেতু কর্মকান্ডের প্রতিটা জবাব, সময় পাছ হওয়ার সাথে হিসাব দেয়।
তবে হয়তো সঙ্গে সঙ্গে রেজাল্ট হয় না বলতে, ওটা বোঝার যোগ্যতা, জানার প্রখরতা, দেখার দৃষ্টি শক্তির আলো, তেজস্বী মেরুদন্ড, বুকের ছাতা, মাজার পাটা, আল্লাহ সবার মধ্যে একই রকম দেন নাই। মন জ্ঞান ধ্যান বিদ্যা বুদ্ধিও দেন নাই। সবার মাঝে রেজাল্ট মেলে, প্রজন্ম পার হলে। কমপক্ষে ৩প্রজন্ম পার হলে। প্রথম প্রজন্মে থাকে সমাজ-সংসার জাতি-দেশ-রাষ্ট্রের সমসাময়িক কোন্দল। মুখরোচক কথ্য, মুখ চেনা চিনি, দুর্নৈতিক রাজনৈতিক সমাজনৈতিক অর্থনৈতিক প্রভৃতি নৈতিক এর হাট বাজার।
দ্বিতীয় প্রজন্মে হিংসা-বিদ্বেষ পরশ্রী কাতরতার থাবা বারে দ্বিগুন। তৃতীয় প্রজন্মেও ঠেলাঠেলি রেষারেষি প্রলয় দংকা ও সংঘাত যাই যাই করেও, না যেয়ে ফেরে। ঠেসেও ধরে শত্রুর আবেশে! চতুর্থ প্রজন্মে সবে বিদ্যাসাগরের অক্ষর জ্ঞান, স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ, অংকের ধারাপাত, আয়ুর্বেদ চিকিৎসা, চর্যাপদ ত্রিপিটক বেদ বাইবেল প্রভৃতির তীর্যক জ্যোতি দরজায় হাকে। পঞ্চম পর্বের থেকে শুরু হয়, মহান আল্লাহ পাকের মাহাত্ম্যে, মানব পরমাত্মার উপরে, একটা আবেদন নিবেদন প্রেরণ। তার দয়ার বরকতে অর্থাৎ অদৃশ্য বল শক্তির ইঙ্গিতে হয় কাজের কাজ, প্রাকৃতিক বলয়েই বলা যায়। এইভাবে ধাপে ধাপে প্রাকৃতিক আদর্শের ধাপ, পাড়ি দেওয়ার সাথেই, কর্মকা- কথা বলে। দিন যত যাই, সমাজের প্রকৃত ভালো কর্মকা- তত জেগে ওঠে। মানুষের চোখের দৃষ্টির সীমানা পেরিয়ে বেরিয়ে আসে। স্বচ্ছ থেকে সচ্ছ হয়। আর শিক্ষা জ্ঞানের কোষ ধৌত হয়ে হয়, উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর। সেই আলোর বর্তিকা ছড়িয়ে পড়ে যেন মহাকাল জয় করে, মহাকাশের পথে, পৃথিবীর রাস্তায়। আসলে জ্ঞান বিদ্যা গুলো যত পুরনো হয়, তত শক্তিশালী শক্তিধর হয়। কলুষ দুর্নীতিগুলো তত দুর্বল হয়ে, সরতে সরতে হারিয়ে যেতে যেতে, বিলকুল ফুরিয়ে অদৃশ্য হয়ে পড়ে। খুঁজেও আর মিলানো যায় না। হ্যাঁ এটাই হলো সত্যি। এটাই হলো বাস্তব। ইতিহাস সময়ের চাকায় পিষ্ট হয়ে, বিকৃত হয় বটে কিন্তু মিথ্যে হয় না। শ্রম এবং কর্মও বিফলে যায় না। বরং মজবুতকারে ঘুরে দাঁড়াই। সময় চলতে চলতে, ঘুরতে ঘুরতে, সঠিক স্থানে পৌঁছালে, তখন তার আপন বলয়েই অশুদ্ধ থেকে শুদ্ধ এবং পরিশুদ্ধ থেকে বিশুদ্ধ হয়। ফিল্টার হয় জ্ঞানগুড়িমা, সমাজ সংসারের খাদ, নিয়তির নৈতিকতা, বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্রতা ধাপে ধাপে। তারপরই সত্যিকারের মানুষ যারা হন বা ছিলেন, তাদের জীবনের হিসেব মেলে। কর্মের পরিধিও মেলে। অন্তরালের যশ খ্যাতিও বেরিয়ে এসে ছড়িয়ে পড়ে দিক বিদিক। তারা সামনে দাঁড়াই বুক টান করে মাথা উঁচিয়ে। প্রকৃত মানুষের জীবনের আলোর বর্তিকা তো সেটাই। তার নিজের জন্য জীবনে তো সেটাই পাওয়া। আর কিছু চাওয়ার প্রয়োজন নেই, বিধাতা পুরুষের কাছে। দেখার প্রয়োজন নেই পিছনে ফিরে। ফুল কভু চাইনা নিজের সুঘ্রান সৌরভ নিজে ভোগ করতে। চাঁদ নেয়না তার জোসনার আলোর সুখ। নদী দেয় মাছের জৌলুস, বিনিময় নেয় না সে কোনদিন। চাইও না পিছনে ফিরে। মনুষ্যত্ব বোধ মানুষেরই থাকবে। সমাজ সংসারে কিছু দিলে, সেও তার বিনিময় চাইবে না। ভুল করেও চাইবে না।।
১৯.৮.২০২৩ ইং, ভোর ৬:৫৫ মিনিট, শনিবার।